কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ‘গণমাধ্যম উপদেষ্টা’ নামে কোন পদ না থাকলেও গণমাধ্যম উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হক ভূঁইয়া। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মাহবুবুল হক ভূঁইয়া প্রেরিত ও রেজিস্ট্রার দপ্তরের সিল সম্বলিত এক চিঠি থেকে পদত্যাগের বিষয়টি জানা যায়। তবে প্রশাসন বলছে গণমাধ্যম উপদেষ্টা নামে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন পদ নেই।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী গণমাধ্যম উপদেষ্টা, নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও আইটি উপদেষ্টা নামে তিনটি পদ সৃষ্টি করেন। সেসময় ‘গণমাধ্যম উপদেষ্টা’ হিসেবে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহাবুবুল হক ভূঁইয়া, ‘আইটি উপদেষ্টা’ হিসেবে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক মাহামুদুল হাসান এবং ‘নিরাপত্তা উপদেষ্টা’ হিসেবে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক দুলাল চন্দ্র নন্দীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে উপদেষ্টাদের দায়িত্ব পালনের কোন নির্দেশনা ছিল না। তৎকালীন রেজিস্টার অধ্যাপক ড. আবু তাহের স্বাক্ষরিত আলাদা আলাদা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি ৮ নভেম্বর জানানো হয়।
তবে ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধন আইন-২০১৩’ এ এমন পদের কোন বিধান না থাকলে তৎকালীন উপাচার্য নিজের পছন্দের শিক্ষকদের জন্য মনগড়া এসব পদ সৃষ্টি করেন। সেসময় মনগড়া পদ সৃষ্টি করায় শীর্ষস্থায়ী বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হলেও প্রশাসন কোন ধরণের কর্ণপাত করেন নি। দায়িত্ব পালন না করলেও এতদিন পদ তিনটি ছিল বলে জানা যায়।
এদিকে উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করা মাহাবুব হক ভূঁইয়া তার পদত্যাগপত্রে লিখেন, আমি ২০১৯ সালের ৮ নভেম্বর থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণমাধ্যম উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বে আছি। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনের শিক্ষক নিয়োগে সীমাহীন অনিয়ম, উপাচার্যের একক কর্তৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের অবৈধ অনলাইন পিএইচডি ডিগ্রির অনুমোদন, পদোন্নতির শর্ত পূরণ না করা সত্ত্বেও কতিপয় শিক্ষককে পদোন্নতি প্রদান, পদোন্নতির সকল শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও শিক্ষকদের একটি অংশকে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করা, পদোন্নতি নীতিমালায় না থাকলেও শিক্ষকদের পদোন্নতির সময় অবৈধ শর্ত প্রদান করা এবং পছন্দ-অপছন্দ বিবেচনা করে এসব শর্ত দেওয়া।
তিনি আরও লিখেন, বিভিন্ন বিভাগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী বিভাগীয় প্রদানের দায়িত্ব হস্তান্তর না করা এবং উপাচার্যের পছন্দের লোকদের আইন লংঘন করে এসব দায়িত্ব দেওয়া, উপাচার্য কর্তৃক শিক্ষকদের ক্যাডার বাহিনী তৈরি করা এবং এই ক্যাডারদের দ্বারা শিক্ষকদের পেটানো এবং গালিগালাজ করার ঘটনা ঘটা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার অর্থ ব্যয়ে অস্বচ্ছতা এবং যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করা। অতএব, বিষয়টি বিবেচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আপনাকে অনুরোধ করছি।
গণমাধ্যম উপদেষ্টা পদত্যাগের বিষয়ে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, এরকম কোন পদ বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে বলে আমি জানি না। যে পদ নেই সেখান থেকে কিভাবে পদত্যাগ করে আমার জানা নাই।